সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীর খবর
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফরিদা ইয়াছমিন (৩১) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার বিকেলে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের শফিক হুজুরের বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
নিহত ফরিদা ইয়াছমিন সোনাইমুড়ী উপজেলার ভানুয়াই গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুর নবীর স্ত্রী এবং নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের দুলাল মিয়ার মেয়ে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পারিবারিক কলহ ও নজরবন্দি জীবন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্বামী নুর নবী স্ত্রীকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন। গত সাত মাস ধরে ফরিদা পৌরসভার শফিক হুজুরের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। অভিযোগ রয়েছে, দুই রুমের ভাড়া বাসায় চারটি সিসি ক্যামেরা বসিয়ে স্ত্রীকে সর্বক্ষণ নজরবন্দি করে রাখতেন নুর নবী। এমনকি শোবার ঘরেও ক্যামেরা লাগানো ছিল।
বিজ্ঞাপন
শনিবার রাতে পারিবারিক কলহের জেরে ফরিদা বাসা থেকে বের হতে চাইলে স্বামী তাকে বের হতে দেননি। এরপর ভিডিও কলে কথা বলার সময় হঠাৎ বোরখা পরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়েন তিনি।
বাড়িওয়ালার বক্তব্য
বাড়ির মালিক শফিক উল্যাহ বলেন—
“ফরিদার সঙ্গে প্রায়ই তার স্বামীর ঝগড়া হতো। এমনকি বেডরুমেও সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিল নুর নবী। সকালে তার দরজা বন্ধ দেখে আমরা পুলিশে খবর দেই। পরে পুলিশ এসে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে।”
পরিবারের অভিযোগ
নিহতের ভাই মাসুদ ও রাশেদ রানা অভিযোগ করেন—
“আমার বোনকে নুর নবী নজরবন্দি করে রেখেছিল। সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। ভিডিও কলে ঘটনা দেখেও সে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সে আসলে চেয়েছে আমার বোন মারা যাক। আমরা এই ঘাতকের ফাঁসি চাই।”
পুলিশের বক্তব্য
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন—
“আমরা সিসি ক্যামেরা ও মুঠোফোন জব্দ করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।