বেগমগঞ্জে দিনব্যাপী সড়ক অবরোধে উত্তাল জনতা
বিস্তারিত:
বৃহত্তর নোয়াখালীতে প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস। নোয়াখালী বিভাগের আন্দোলন এখন কেবল একটি প্রশাসনিক দাবিতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি পরিণত হয়েছে কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনে, মর্যাদার লড়াইয়ে— এমন মন্তব্য করেছেন বক্তারা।
গতকাল বুধবার সকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তা জামে মসজিদ থেকে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক বিশাল মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন চত্বরে গিয়ে সমবেত হয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলা এই ব্লকেড কর্মসূচির কারণে নোয়াখালী-ঢাকা, নোয়াখালী-কুমিল্লা, নোয়াখালী-ফেনী ও নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
ব্লকেড চলাকালীন এক সমাবেশে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস বলেন,
> “দেশের প্রাচীনতম জেলাগুলোর অন্যতম নোয়াখালী। ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিক্ষা—সব দিক থেকেই নোয়াখালী অনন্য। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ আসে এই অঞ্চল থেকে। অথচ প্রশাসনিকভাবে এই জেলাকে অবহেলা করা হচ্ছে। কুমিল্লা বিভাগের সঙ্গে নোয়াখালীকে যুক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু নোয়াখালীবাসী সেই ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না।”
তিনি আরও বলেন,
> “নতুন বিভাগ করতে হলে নোয়াখালীকেই করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে নোয়াখালীবাসী কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে জবাব দেবে।”
হেফাজতে ইসলাম নোয়াখালী জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত বলেন,
> “দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে পিছিয়ে আছে এই অঞ্চল। অথচ বৃহত্তর নোয়াখালী ঐতিহ্য, শিক্ষা, কৃষি ও বাণিজ্যে সমৃদ্ধ। এখন সময় এসেছে নোয়াখালী বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উপকূলীয় উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের।”
বক্তারা আরও বলেন, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো নিয়ে নোয়াখালী বিভাগ গঠিত হলে প্রশাসনিক কার্যক্রম হবে দ্রুত ও কার্যকর, পাশাপাশি উপকূলীয় সুরক্ষা, বাণিজ্যিক প্রসার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাও হবে সহজতর।
এসময় চৌমুহনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মহসিন আলম, চৌমুহনী ব্লাড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা টিআই সুজন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সীমান্ত, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ তুষারসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
হাজারো মানুষ “নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটি”, “নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ” এবং সর্বস্তরের জনগণ ব্যানারে সমবেত হয়ে স্লোগান তোলেন—
“প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ চাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই।”