থানা থেকে মামলা বিবরণি নিয়ে টাকার বিনিময়ে সালিশ করেন ওসির আত্মীয় কামাল উদ্দিন!
নোয়াখালীর হাতিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলা নিয়ে টাকার বিনিময়ে সালিশ করার অভিযোগ উঠেছে থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদার আত্মীয় (তালোই) মো. কামাল উদ্দিনের (৭২) বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ— তিনি থানায় দায়ের হওয়া মামলার কপি সংগ্রহ করে বাদী-বিবাদীদের জোরপূর্বক সালিশে বসান এবং টাকা ও স্বাক্ষরযুক্ত খালি স্ট্যাম্প জমা নেন। কেউ তার প্রস্তাবে রাজি না হলে মিথ্যা মামলায় হয়রানির হুমকিও দেন।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতিয়া ডাকবাংলো সংলগ্ন মেজর মো. ফয়সাল বিন মির্জার বাসভবন ‘ক্যাসকেড ব্লু’-তে বসবাস করেন কামাল উদ্দিন। এখানেই বেশিরভাগ সালিশ পরিচালনা করা হয়। স্থানীয়রা জানান, মেজর ও ওসির আত্মীয় হওয়ার সুবাদে তিনি দাগি আসামিদের নিরাপদ আশ্রয়ও দিয়ে থাকেন।
ভুক্তভোগী রাশেদা বেগম (৪৮) অভিযোগ করে বলেন, “গত ১৯ আগস্ট আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে (নম্বর-১৪), পরে কামাল উদ্দিন আমাদের ফোন দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। অন্যথায় মিথ্যা মামলার ভয় দেখান।”
বিজ্ঞাপন
এমন একাধিক কলরেকর্ড গণমাধ্যমের হাতে এসেছে, যেখানে টাকা নিয়ে সালিশ ও মিথ্যা মামলার হুমকির প্রমাণ মেলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে স্বীকার করেন যে তিনি সালিশের সময় স্বাক্ষরযুক্ত খালি স্ট্যাম্প ও টাকা জমা নেন। তবে দাবি করেন, “বাদী-বিবাদীরা নিজেরাই সমাধানের স্বার্থে আমার কাছে আসে।”
অন্যদিকে হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, “কামাল উদ্দিন আমার দূরসম্পর্কের আত্মীয়। তাকে থানায় না আসতে নিষেধ করেছি। কেউ যেন তার তদবির না শোনে সে বিষয়ে সতর্ক করেছি।”
নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সাহাদত হোসেন বলেন, “খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করতে পারেন।”

