স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পুরুষোত্তমপুর এলাকার বিধবা নাজমা আক্তার (৪০) তাঁর ছেলে নাজমুল আলম নাঈমকে ঘিরে পরিকল্পিত প্রতারণা, জালিয়াতি ও একাধিক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শনিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে নাজমুল আলম নাঈম (১৮) চাটখিল মেডিনোভা জেনারেল হাসপাতালের ফার্মেসিতে কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছে। একই হাসপাতালের কর্মী আসমা আক্তার (২৭) দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি বিবাহিত—এ তথ্য জানার পর নাজমুল সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করলে আসমা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ছেলেকে চাকরিচ্যুত করানোসহ নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
নাজমা আক্তারের দাবি, ঘটনাটি আসমার স্বামী এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জানা হয়ে গেলে আসমা নিজের সংসার রক্ষার নামে ভয়াবহ একটি চক্রান্ত সাজান। তিনি তাঁর নাবালিকা ছোট বোন তামান্না আক্তার সাথী (১১)-এর নামে নাজমুলকে স্বামী দেখিয়ে একটি জাল নিকাহনামা তৈরি করেন। নোয়াখালী জেলা জজকোর্টের পিছনের একটি কাজী অফিসে ভুয়া কাজীর মাধ্যমে এই নিকাহনামা প্রস্তুত করা হয়।
পরে হাসপাতালের ম্যানেজারের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে নাজমা আক্তার নথিপত্র সংগ্রহ করেন। কাজী অফিসের বালাম রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায়—উক্ত তারিখ, বালাম নম্বর ও পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তির বিবাহ নিবন্ধিত রয়েছে। কাজী কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে জানান, নাজমুল ও তামান্নার কোনো বিবাহ তাদের কার্যালয়ে নিবন্ধিত হয়নি।
জাল নিকাহনামা আদালতে যাচাই করে সত্য উদঘাটিত হলে নাজমুল জামিন পান এবং সংশ্লিষ্ট কাজীকে রেজিস্টারসহ হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নাজমা আক্তার অভিযোগ করেন, নিকাহনামা জালিয়াতির পাশাপাশি তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলা ও গণধর্ষণ মামলাও দেওয়া হয়েছে—যা তাঁর দুই ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, “একজন বিধবা মায়ের অসহায় সংসার ভেঙে দেওয়ার এই প্রতারণা ও মিথ্যার নাটক বন্ধ হওয়া এখন জরুরি।”
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।
— শেষ —

