মো. আরিফ হোসেন-
নোয়াখালীর খবর-
নোয়াখালীর সদর উপজেলার পূর্ব মাইজচরা গ্রামের কিশোর মেহেদী হাসান (১৫) প্রায় এক বছর ধরে নিখোঁজ। ছেলে হারানোর পর থেকে থানা, আদালত, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে গণমাধ্যম—সবার দ্বারে দ্বারে ছুটে চলেছেন তার মা সুরমা বেগম, তবুও মিলছে না কোনো খোঁজ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাজের সন্ধানে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার চেঙ্গাহাটা এলাকার তৃষা ব্রিক ফিল্ডে যোগ দেয় মেহেদী। স্থানীয় সোলেমান মাঝির মাধ্যমে সেখানে কাজ শুরু করে সে। নিখোঁজের আগে ২৩ অক্টোবর ব্রিক ফিল্ডের মালিক তপনের মুঠফোনে ছেলের সঙ্গে শেষবার কথা হয় সুরমা বেগমের।
পরদিন থেকেই মেহেদীর ফোন বন্ধ। এরপর বহুবার তপনের ফোনে যোগাযোগ করলেও মেহেদীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে মালিক তপন দাবি করেন—মেহেদী নাকি ২৩ অক্টোবর বাড়ি চলে গেছে। কিন্তু সে আর বাড়ি ফেরেনি।
সুরমা বেগম বিষয়টি তপন ও সোলেমানকে জানালে তারা উল্টো তাকে ভয়ভীতি দেখায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর তিনি বরুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাধ্য হয়ে নোয়াখালী মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। তারপরও ছেলের সন্ধান মিলেনি।
সুরমা বেগম বলেন,
“এক বছর ধরে ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। পুলিশ, রাজনীতিক, সাংবাদিক—যেখানে যাই, শুধু আশ্বাসই পাই। আমি বিশ্বাস করি, ফিল্ডের মালিক তপন আর মাঝি সোলেমান আমার ছেলেকে হয়তো হত্যা করেছে বা অন্য কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে। আমার ছেলেকে ফেরত পেতে প্রশাসনের দয়া চাই।”
এ বিষয়ে জানতে তৃষা ব্রিক ফিল্ডের মালিক তপনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
“মেহেদী কয়েক মাস কাজ করে ফিল্ড থেকে চলে গেছে। এখন সে কোথায় আছে তা তার মা-ই জানে। আমি জানি না।”
তিনি আরও দাবি করেন মেহেদীর বয়স ১৬–১৭ বছর এবং ৯–১০ হাজার টাকা বেতনে সে কাজ করতো।
এদিকে, সুরমা বেগমের দায়ের করা মানবপাচার মামলার তদন্ত করছেন নোয়াখালী পিবিআইয়ের পরিদর্শক রাশেদ। তদন্তের অগ্রগতি জানতে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ছেলে হারিয়ে দিশেহারা সুরমা বেগম এখন শুধু অপেক্ষায়—অন্তত তার সন্তানের খোঁজ যেন পাওয়া যায়।
— শেষ —
সম্পাদক হিমেল আহাম্মেদ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত