বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা—৯ মাত্রার বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না
প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার:
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় এক লুকানো ভূ-চ্যুতি (Hidden Fault) শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে—এই ফল্ট লাইনে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই মধ্যে গত দুই দিনে চারবার ভূকম্পন অনুভূত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আগামী এক সপ্তাহে আরও ২০ বার ভূমিকম্প হতে পারে।
🔶 “এক সপ্তাহে আরও ২০ বার ভূকম্পন হতে পারে”—বুয়েট বিশেষজ্ঞ
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ মেহেদি আহমেদ আনসারী জানান, সাম্প্রতিক কম্পনগুলোর উৎপত্তিস্থল নরসিংদী। তিনি বলেন—
“যদি ৫.৭ মাত্রার চেয়েও বড় ভূমিকম্প হয়, তাহলে স্বল্প সময়ে ভয়াবহ দুর্যোগ দেখা দিতে পারে।”
🔶 তিনটি টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষপথে বাংলাদেশ
ভারত, ইউরেশিয়া ও বার্মা—এই তিন প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের রুবাইয়াত কবির জানান—
“প্লেটগুলো এখন আটকানো অবস্থা থেকে খুলে যাচ্ছে। ভারতীয় প্লেট ইউরেশীয় প্লেটে আঘাত করলে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।”
🔶 ‘মেগা-থার্স্ট ফল্ট’—গবেষণার উদ্বেগ
২০১৬ সালের গবেষণায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পললস্তরের গভীরে বিশাল ‘মেগাথার্স্ট ফল্ট’ শনাক্ত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন—
“সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্লেট সংযোগস্থলে গত ৮০০–১,০০০ বছরে জমে থাকা শক্তি মুক্ত হয়নি। এটি ‘রিং অব ফায়ার’-এর মতোই বিপজ্জনক।”
🔶 ভূমিকম্পের গভীরতা ও প্রকৃতি জানতে চলছে নমুনা পরীক্ষা
ঘোড়াশালের ফাটল এলাকা থেকে সংগৃহীত মাটি পরীক্ষা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ স ম ওবায়দুল্লাহ বলেন—
“নমুনা বিশ্লেষণ করলে ভূমিকম্পের প্রকৃতি ও গভীরতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
🔶 ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা
টেকনাফ–মিয়ানমার ফল্ট লাইনে ১৭৬২ সালে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে সেন্টমার্টিন দ্বীপ প্রায় ৩ মিটার ওপর উঠে এসেছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সেই একই লাইনে আবারও শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।
⚠️ বিশেষজ্ঞদের সর্বশেষ বার্তা
প্লেটের চলন অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
গবেষণা, পর্যবেক্ষণ, সচেতনতা ও দুর্যোগ প্রস্তুতিই এখন প্রধান ভরসা।

নোয়াখালীর খবর অনলাইন | নির্ভরযোগ্য সংবাদে আপনার পাশে
সম্পাদক হিমেল আহাম্মেদ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত