নোয়াখালীর খবর-
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি অধিকাংশ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এর অংশ হিসেবে গত ৩ নভেম্বর চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নোয়াখালী–৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট ও সদরের আংশিক) আসনে মো. ফখরুল ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।
ছবি-ফখরুল ইসলাম।
নাম ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে নির্বাচনী মাঠে সরব হয়ে ওঠেন।
প্রার্থী পরিবর্তন দাবির পেছনে ‘উসকানি’ অভিযোগ
তবে এ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি তোলায় নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে। অভিযোগ উঠেছে—‘জামায়াতের উসকানিতে’ এ দাবির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মনোনয়নবঞ্চিত নেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ। স্থানীয়দের দাবি, তিনি মনোনয়ন না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন এবং এতে সরাসরি লাভবান হবে জামায়াত।
স্থানীয় সূত্র মতে, ধানের শীষের ঘোষিত প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক গ্রহণযোগ্যতা ও ‘ক্লিন ইমেজ’–এর কারণে ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। ফলে এই মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন হলে প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মো. বেলায়েত হোসেন ব্যাপক সুবিধা পেতে পারেন।
স্থানীয় নেতাদের অবস্থান-
বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল বাশার বাহার বলেন,
“তারেক রহমান সব বিবেচনা করেই একজন চমৎকার প্রার্থী দিয়েছেন। কয়েক লাখ ভোটের ব্যবধানে ফখরুল ইসলাম জয়ী হবেন।”
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুল হক বলেন,
“ধানের শীষের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত। তাদের সুবিধা দিতে নানা কৌশল করা হচ্ছে। প্রার্থী পরিবর্তন হলে আসন হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।”
কবিরহাটের এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“জামায়াত সুবিধা পেতে মনোনয়নবঞ্চিত নেতার আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন,
“আবেদের কর্মীরা অনেকদিন ধরে দাবি করছেন তিনি নোয়াখালী–৫ আসনের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত। কিন্তু বাস্তবে তিনি কী দায়িত্ব পেয়েছেন তা আমরা কেউ জানি না। এখন যখন দলের হাই কমান্ড জননেতা তারেক রহমান ফখরুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তখন তিনি সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। আমার মতে, তিনি ফখরুল সাহেবের না—বিরোধিতা করছেন ধানের শীষের, বিরোধিতা করছেন তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের।”
দলীয় অবস্থান: কঠোর সতর্কতা
কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন বলেন,
“আমরা ঘোষিত প্রার্থীকে নিয়েই মাঠে আছি। দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে যেকোনো নেতাকর্মী সাংগঠনিক শাস্তির মুখোমুখি হবেন।”
মনোনয়নবঞ্চিত বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ এবং জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির ও দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন,
“উসকানির অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা আমাদের প্রার্থীর পক্ষে স্বাভাবিক প্রচারে আছি।”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন,
“আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি—এই আসনে দলের প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম। এর বাইরে কেউ ভিন্ন কর্মসূচি নিলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সম্পাদক হিমেল আহাম্মেদ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত