শাহাদাত হোসেন
নোয়াখালী খবর ডিজিটাল ডেস্ক :
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী–৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন দলীয় সক্রিয় নেতা আবেদ চৌধুরী। প্রশ্ন উঠছে—দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া ছাড়াও, নিজস্ব রাজনৈতিক প্রোফাইল, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও স্থানীয় সংযোগের কোন কোন সীমাবদ্ধতা তাঁর মনোনয়ন পাওয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
আবেদ চৌধুরী বাদ পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক যোগ্যতার প্রশ্ন,প্রতিযোগিতায় অন্যদের তুলনায় দুর্বল অবস্থান।
দল যখন কোনো আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচন করে, তখন প্রার্থীর মধ্যে কয়েকটি স্কিল খুঁজে দেখে,জনসংযোগ ক্ষমতা,মাঠে উপস্থিতি, রাজনৈতিক গণনা পরিচালনার দক্ষতা।
সূত্র মতে, আবেদ চৌধুরীর এসব ক্ষেত্রে “সম্পূর্ণ অযোগ্য” বলা না গেলেও, একই আসনে কয়েকজন প্রভাবশালী প্রতিদ্বন্দ্বী এর চেয়ে বেশি শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
দলীয় পদবী ও দৃশ্যমান নেতৃত্ব—সংগঠনিক গুরুত্ব যথেষ্ট ছিল না আবেদ চৌধুরী। বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও এই তুলনামূলক দুর্বলতা তাঁকে নমিনেশন দৌড়ে পিছনে ফেলতে হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বা জেলা পর্যায়ে দৃশ্যমান শক্তিশালী কোনো পদে তিনি দীর্ঘ সময় ছিলেন না।দলে নিজের অবস্থানকে উচ্চতর পর্যায়ে তুলে ধরার সুযোগ কম পেয়েছেন,ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটির কাছে তাঁর সাংগঠনিক ও কৌশলগত গুরুত্ব পর্যাপ্তভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন।
আর্থিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা বেশি বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে—প্রচারণা,কর্মী ব্যবস্থাপনা, কেন্দ্রভিত্তিক কার্যক্রম—এসব পরিচালনায় আর্থিক সক্ষমতা বড় ভূমিকা রাখে।
বিএনপির স্থানীয় কিছু নেতার মতে, আবেদ চৌধুরী অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলনায় নির্বাচনী অর্থায়নে কম লাভজনক প্যাকেজ দিতে পারেন—এই ধারণা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।
সাংগঠনিক দুর্বলতা—মাঠের কাঠামো তাঁর পক্ষে শক্ত নয়।মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রয়োজন—নিয়মিত কর্মীসভা,ইউনিট কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ,দীর্ঘমেয়াদী সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ।
তবে নোয়াখালী–৫ এ আবেদের সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক তুলনামূলক দুর্বল বলে দলীয় অভ্যন্তরীণ আলোচনায় উঠে এসেছে।
ফলে কেন্দ্র মনে করতে পারে, একটি বিভক্ত মাঠ তিনি দৃঢ়ভাবে সামলাতে পারবেন না।
এলাকার সঙ্গে পূর্ব সম্পৃক্ততার ঘাটতি—ভোটারদের সঙ্গে দূরত্ব দীর্ঘদিন এলাকায় সক্রিয় না থাকা বা নিয়মিত জনসংযোগ না রাখাকে অনেক নেতাকর্মীরা নমিনেশন বঞ্চনার বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এ সংক্রান্ত তিনটি দিক বিশেষভাবে আলোচিত—
স্থানীয় সমস্যা, সংকট ও উন্নয়ন দাবিতে নিয়মিত অংশ না নেয়া,সামাজিক ইভেন্টে প্রভাব ও উপস্থিতির ঘাটতি,তরুণ ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড তৈরি না হওয়া অন্যতম কারণ।
ফলে মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পরিষ্কার ধারণা গঠিত হয়েছে—অন্য প্রার্থী মাঠে বেশি কার্যকরভাবে লড়তে পারবেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে জানতে পারলাম আবেদ চৌধুরী দায়ী হতে পারেন? তুলনামূলক রাজনৈতিক যোগ্যতা কম দৃশ্যমান,শক্তিশালী দলীয় পদ বা প্রভাবশালী অবস্থান অনুপস্থিত, নির্বাচনী অর্থায়ন ও রিসোর্স ব্যবস্থাপনায় সীমাবদ্ধতা, সাংগঠনিক কাঠামোর দুর্বলতা ও কর্মী নেটওয়ার্কের অভাব,এলাকার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পৃক্ততা কম থাকা।
এগুলোই মিলিতভাবে তাঁকে নমিনেশনের বাইরে রাখতে প্রভাব ফেলেছে বলে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অভিমত।

