নোয়াখালীর খবর:
নোয়াখালী জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিনকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সোমবার রাতে ঢাকার নিজ বাসা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয়দের দাবিতে জানা যায়, মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে এলাকায় ব্যাপকভাবে পরিচিত। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও তিনি কখনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ বা প্রভাব খাটিয়ে কাউকে ক্ষতি করেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গণে তার ছিল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল বলেও জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি তহবিল থেকে এক কাপ চা পর্যন্ত না নেওয়ার উদাহরণও দিচ্ছেন অনেকেই। তিনি নিজ পকেটের টাকায় অতিথি আপ্যায়ন করতেন বলেও উল্লেখ করেন পরিচিতরা। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সরকারি সম্মানি ভাতাও তিনি গ্রহণ করেননি। নিজ পরিকল্পনায় এবং অর্থায়নে জৈতুন নাহার কাদের মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা
ছবি জৈতুন নাহার কাদের মহিলা কলেজ-

সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায়ও ছিল তার সক্রিয় ভূমিকা।
শিক্ষা বিস্তারে কোম্পানীগঞ্জে হাতে গোনা যেসব মানুষের ভূমিকা রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শাহাব উদ্দিন। সাবেক মুজিব কলেজ (বর্তমান কোম্পানীগঞ্জ সরকারি কলেজ), বামনী কলেজ, চৌধুরীহাট কলেজ, আবু নাছের পৌর উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে দিয়েছেন সরাসরি অবদান। স্থানীয়রা জানান, সরকারি হিসাব বিভাগে খুঁজলেও তার বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক অনিয়মের তথ্য পাওয়া যাবে না।
কোম্পানীগঞ্জ মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রশাসন জায়গা না পেলে তিনি নিজের মালিকানাধীন কোটি টাকার জমি দান করেন।
ছবি কোম্পানীগঞ্জ মডেল মসজিদ-

পরে সেখানে মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঠিকাদারি কাজ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রতিকারও নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিক, শিক্ষক, সমাজসেবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সাংবাদিক মান্নান মুন্না লিখেন—
“তিনি কারো ক্ষতি করার মানুষ নন। বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, তাকে যেন কোনো ধরনের অযথা হয়রানির মধ্যে না ফেলা হয়। একজন সৎ মানুষের সম্মান রক্ষায় সবাইকেই দায়িত্বশীল হতে হবে।”
স্কুল শিক্ষক সুমন দাস মন্তব্য করেন—
“একজন সত্যিকারের জননেতা কীভাবে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেন তার জীবন্ত উদাহরণ মোহাম্মদ শাহাব উদ্দীন। সরকারি ভাতা না নেওয়া, নিজের পকেট থেকে মানুষের আপ্যায়ন এবং মডেল মসজিদের জন্য বিপুল পরিমাণ জমি দান—এসবই তার সততা ও মানবিকতার প্রমাণ।”
এ ছাড়াও আরও অনেক গণমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের দাবি—শাহাব উদ্দিন জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন কখনো সরকারি ভাতা বা সুবিধা গ্রহণ করেননি, বরং নিজের অর্থ খরচ করে মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যে—এমন একজন সৎ ও নীতিবোধসম্পন্ন মানুষকে গ্রেফতার করা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়।

