নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নে ইসলামী ছাত্রশিবির ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি। সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাবে নেয়াজপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়— জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ওপর হামলা চালিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, গত শনিবার বিকেলে জামায়াত-শিবিরের লোকজন নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজার জামে মসজিদে কোরআন শিক্ষার একটি কর্মসূচি পালন করছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ থেকে জামায়াতে যোগ দেওয়া মো. সেলিমের সহায়তায় ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ওই কর্মসূচিতে এলাকার শিশু-কিশোরদের কাছ থেকে ছাত্রশিবিরের ফরম পূরণ করানো হচ্ছিল। স্থানীয় যুবদল সভাপতি ও কয়েকজন মুসল্লি মসজিদে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করলে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
কামাল ও জাকির বলেন, “শনিবারের ঘটনার সমাধানের উদ্যোগ চলছিল। এর মধ্যেই রোববার বিকেলে জামায়াত-শিবির পুনরায় মসজিদে আরেকটি কর্মসূচি দেয়। ফেনীসহ আশপাশের উপজেলা থেকে লোকজন এনে দলীয় স্লোগান দেওয়া হয়। মুসল্লিরা আপত্তি জানালে বিএনপি কর্মীরাও শান্তি বজায় রাখতে এগিয়ে যান। কিন্তু তখনই জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২৫ জন আহত হন। বিএনপি দাবি করে, তাদের কেউ প্রথমে হামলা করেনি; বরং সাধারণ মুসল্লিদের ক্ষোভ ঠেকাতে বিএনপি কর্মীরা এগিয়ে না এলে প্রাণহানি ঘটতে পারত।
বিএনপি এই ঘটনার তদন্ত দাবি করে বলেন, “মসজিদে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান ফিরোজ, আইনজীবী আবদুর রহিমসহ স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের নেতারা।
অন্যদিকে, বিএনপির অভিযোগকে “ভিত্তিহীন” বলে দাবি করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী উত্তর শাখার সেক্রেটারি মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন,
“দারসে কোরআন কর্মসূচি ছিল পূর্বনির্ধারিত। বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীরাই সেখানে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এমনকি মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া শিবির কর্মীদেরও তারা রেহাই দেয়নি, ভাঙচুর করেছে।”
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।


