নোয়াখালীর খবর-
দেশজুড়ে স্ক্যাবিস (Scabies) এখন ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগকে হালকা ভাবে নিলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। তাই সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
স্ক্যাবিস কী?
স্ক্যাবিস একটি তীব্র চর্মরোগ, যা Sarcoptes Scabiei নামক এক ধরনের মাইটের কারণে হয়। এটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান উপসর্গ হলো চরম চুলকানি, বিশেষ করে রাতে।
স্ক্যাবিসের ভয়াবহতা
চুলকানি ও অস্থিরতা: আক্রান্তরা বিশেষ করে রাতে তীব্র চুলকানিতে ঘুমাতে পারে না, শিশুরা কান্নাকাটি করে।
চামড়ায় ক্ষত ও ইনফেকশন: বারবার চুলকানোর ফলে ক্ষত, ফুসকুড়ি এমনকি পুঁজ হতে পারে।
পরিবারে দ্রুত ছড়ায়: একজন আক্রান্ত হলেই পুরো পরিবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা: সঠিক চিকিৎসা না হলে সেকেন্ডারি ইনফেকশন, সেলুলাইটিস এমনকি শিশুদের কিডনি জটিলতাও হতে পারে।
মানসিক চাপ: অবিরাম চুলকানি মানসিক অশান্তি ও বিরক্তি সৃষ্টি করে।
চিকিৎসা
পারমেথ্রিন ৫% ক্রিম: কার্যকর ওষুধ। গলা থেকে পা পর্যন্ত মেখে রাতভর রেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে হয়। প্রয়োগের সময় শরীরের কোনো অংশ বাদ দেওয়া যাবে না। ৭ দিন পর আবার প্রয়োগ করতে হতে পারে।
কোম্বাইন্ড ক্রিম বা অন্যান্য সলিউশন: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা যায়।
আইভারমেকটিন (Ivermectin): জটিল ও পুনঃসংক্রমণের ক্ষেত্রে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হতে পারে।
অ্যান্টিহিস্টামিন: চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
সতর্কতা ও করণীয়
আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক, চাদর, বালিশের কাভার গরম পানিতে সিদ্ধ করে ধুতে হবে এবং রোদে শুকাতে হবে।
ব্যবহৃত জিনিসপত্র কমপক্ষে ৩ দিন আলাদা করে রাখতে হবে।
পুরো পরিবারের সবাইকে একসাথে চিকিৎসা নিতে হবে, উপসর্গ না থাকলেও।
নিয়মিত হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে হবে।
বিশেষ সতর্কতা
শিশু ও গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ক্যাবিসকে সাধারণ চুলকানি ভেবে অবহেলা করা যাবে না। এর ভয়াবহতা অনেক। যারা সুস্থ হয়েছেন তারাও মাসে একবার পরিবারের সবাই মিলে পারমেথ্রিন ব্যবহার করতে পারেন।
নিজে জানুন, অন্যকে জানান— সবাই সচেতন হলে স্ক্যাবিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।