কোম্পানিগন্জ প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের চরএলাহী ঘাটকে ঘিরে চলছে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার আর সহিংস দখল-বেদখলের খেলা। এতে অস্থির হয়ে উঠেছে স্থানীয় জনজীবন।
সরকারি বিধি মোতাবেক ঘাটটি ইজারা নেওয়া হলেও গত বছরের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিকদের মদতে ইজারা ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে চলে যায় বিএনপি নেতাদের হাতে। এরপর থেকে ঘাট দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হামলা, খুনোখুনিতে পুরো এলাকা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
সংঘর্ষ ও খুনাখুনি...
২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট ঘাট নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে নিহত হন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবদুল মতিন তোতা। পরবর্তীতে যুবদল নেতা এরশাদ মাঝিও খুন হন সংঘর্ষে। এতে আহত হন বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এরপরও থামেনি সহিংসতা।
টাকার কুমির চরএলাহী....
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, তোতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর তার ছেলে ইসমাইল তোতা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘাট ও আশপাশের বালু মহালসহ বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লাখ লাখ টাকা লুট করছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জমি-প্রজেক্ট দখলের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ও করছে তারা। ফলে পুরো চরএলাহী ইউনিয়ন আজ তাদের দখলে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
কল রেকর্ডে চাঁদাবাজির প্রমাণ....
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া দুটি কল রেকর্ডে চরএলাহী ঘাটে প্রতিটি স্পিট বোট চালাতে ২০% হারে চাঁদা দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠে। ওই চাঁদার ভাগ যায় স্থানীয় বিএনপি নেতা, ইউএনও ও ওসির পকেটে—এমন কথাও শোনা গেছে কল রেকর্ডে।
প্রশাসনের বক্তব্য....
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ঘাট নিয়ে সীমানা জটিলতার মামলার কারণে ইজারা দেওয়া হয়নি। তবে চাঁদাবাজির বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। কল রেকর্ডের অভিযোগকে ‘সত্য নয়’ দাবি করে তিনি জানান, ঘাট বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের দাবি.....
চরএলাহীর বাসিন্দারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, "এই ঘাটকে ঘিরে যেন আর রক্ত ঝরতে না হয়। সরকারিভাবে ঘাট পরিচালনার ব্যবস্থা করলে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক হবে।"
চরএলাহী ঘাটে চাঁদাবাজি, দখলদারি আর সহিংসতা বন্ধে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহল কবে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে—সেই প্রশ্নে দিশেহারা স্থানীয় মানুষ।
সম্পাদক হিমেল আহাম্মেদ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত